অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে মোট বৈদেশিক দেনা ছিল প্রায় ৩৯ হাজার কোটি টাকা। এখন তা কমে ১০ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ, দায়িত্ব নেওয়ার পর সরকার ২৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করেছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানান, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে মোট বৈদেশিক দেনার পরিমাণ ছিল ৩.২ বিলিয়ন ডলার (১২১ টাকায় প্রায় ৩৯ হাজার কোটি টাকা)। বর্তমানে তা ৮২৯ মিলিয়ন ডলার (১২১ টাকায় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা) কমে এসেছে। এই বছরেই এই দেনা পরিশোধের পরিকল্পনা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বকেয়া ঋণের মধ্যে বিদ্যুৎ খাতের বকেয়া ৫২৯ মিলিয়ন ডলার, এবং জ্বালানি খাতের বকেয়া ৩০০ মিলিয়ন ডলার। বিদ্যুৎ খাতের বকেয়ার মধ্যে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিল এবং কয়লা বিল উল্লেখযোগ্য, আর জ্বালানি খাতের অধিকাংশ বকেয়া এলএনজি আমদানি বিল থেকে আসে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৫৫ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা আনুমানিক ব্যয়ে ৯৬টি এলএনজি কার্গো আমদানির পরিকল্পনা করেছে। ২০২৫-২৬ সালে এই সংখ্যা ১১৫টি হতে পারে, যার আনুমানিক ব্যয় হবে ৬৭ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা, এবং গড়ে প্রতি কার্গো এলএনজির জন্য খরচ হবে প্রায় ৫৮৭ কোটি টাকা।
সরকার জ্বালানি ভর্তুকি হিসেবে ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে জানিয়ে ইএমআরডি সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, “নতুন গ্যাস সরবরাহের জন্য সামান্য শুল্ক সমন্বয়ের মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে আমরা আরও বেশি এলএনজি আমদানি করতে পারব।”
বিদ্যুৎ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বৈদেশিক বকেয়া পরিশোধের জন্য ৬০ দিনের একটি চক্র নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সরকার তার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করবে এবং ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সব বকেয়া সম্পূর্ণরূপে পরিশোধ করা হবে।দেশীয় গ্যাসের রিজার্ভ কমে যাওয়ার ফলে বাংলাদেশ বর্তমানে জিটুজি ভিত্তিতে এবং খোলা বাজার থেকে এলএনজি আমদানি করছে। বর্তমানে এলএনজির দাম প্রতি ইউনিট ৭০ টাকা, যা দেশীয় গ্যাসের সঙ্গে মিশিয়ে গ্রাহক পর্যায়ে ৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) আগামী জুনে তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পরবর্তী বৈঠকের আগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বৈদেশিক দেনা পরিশোধের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে জমা দিতে বলেছে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আইএমএফকে দেওয়া জন্য ওই কর্মপরিকল্পনা তৈরির কাজ চলছে।
বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এনআইএন